বিদেশ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারের একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী গতকাল মঙ্গলবার থাইল্যান্ড সীমান্তের পাশে সামরিক বাহিনীর একটি ঘাঁটি দখলে নেওয়ার কথা জানিয়েছে। দেশেটির জান্তাপ্রধান কয়েকদিন আগে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরই এই সংঘর্ষের খবর আসলো। মঙ্গলবার ভোরে পূর্বাঞ্চলীয় থাই সীমান্তের এক সামরিক ঘাঁটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী কারেন আর্মিদের লড়াই শুরু হয়। ওই এলাকাটি মূলত কারেনদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে এক পর্যায়ে সেই লড়াইয়ে সেনাবাহিনী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের কাছে হার মানে। গত ফেব্রুয়ারির প্রথমদিনে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের প্রধানসহ অন্যদের আটক করার মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রক্ষমতা নিজেদের দখলে নেয়। এরপর থেকে বিক্ষোভ শুরু হলে তা দমনে নৃশংস অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। মিয়ানমারের কয়েকটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য কয়েক দশক ধরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তারা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদকারীদের সমর্থন দিয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামিল হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে এসব গোষ্ঠী। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকে মিয়ানমারের পূর্ব সীমান্তের কাছে সামরিক বাহিনীর সাথে লড়াই করা সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) জানিয়েছে, তারা একটি সেনা ঘাঁটি দখল করেছে এবং তা পুড়িয়ে দিয়েছে। গোষ্ঠীটির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান পাদো সাও তাও নী রয়টার্সকে জানান, কেএনইউ বাহিনীগুলো ভোরে ঘাঁটিটি দখল করে নেয়। হতাহতের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’পক্ষের মধ্যে আরও কয়েকটি জায়গায় লড়াই চলছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। ভিডিও ফুটেজে সংঘর্ষস্থলের পাহাড় থেকে আগুন ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। অনেক দূর থেকেও সেখানে এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। সেনাবাহিনীর ঘাঁটিটি ছারখার করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীরা সৈন্যদের দৌড়ে পালাতে দেখেছেন। স্থানীয় মানুষজন বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরুর পর অনেক গ্রামবাসী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে সেনাবাহিনী ব্যাপক হামলা ও অভিযান চালাবে; এমন ভয়েই মূলত ঘর ছেড়েছেন তারা।
Leave a Reply